Skip to content
Home » এক নতুন সমুদ্র উপহার – লাল কাঁকড়া বিচ

এক নতুন সমুদ্র উপহার – লাল কাঁকড়া বিচ

Featured image of Lal kakra beach
Share this in your social media

১:

লাল কাঁকড়া বিচ, দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর নামটি অনেক দিন ধরেই মনের গভীর থেকে সুর সাধছিলো। সুযোগটা পেয়ে গেলাম এ বছরের আগস্ট মাসের ঈদের ছুটিতে। আসলে বড় মেয়ের জন্মদিন ছিল ১৭ই আগস্ট। মেয়েকে কথা দিয়েছিলাম এইবার জন্মদিনের উপহার হিসেবে একটি ছোট্ট মিষ্টি জায়গায় তাকে ঘুরতে নিয়ে যাবো। সমুদ্র স্নানের ব্যাপারে আমার দুই মেয়েরই একটু লোভ জন্মেছে, এটা আমি ইদানীং খেয়াল করেছি। সেই ইচ্ছার সাথেই তাল মিলিয়ে দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরের শ্রী রামকৃষ্ণ মন্দির, বিকেকানন্দ মঠ, ব্যারাকপুর (মন্দারমনি শাখা)  মিশনের বিধু মহারাজের সাথে দূরাভাষে কথা বলে ২২শে আগস্টের জন্য একটি বড় রুম বুক করে ফেললাম। থাকা খাওয়া সমেত মাথা পিছু ৫০০/- টাকা ভাড়া দিনে।

২:

বাচ্ছাদের নিয়ে বেরোনো মানে সময়ের ব্যাপারে কঠোর নিয়মানুবর্তিতাকে কিঞ্চিৎ শিথিল করতেই হয়। আমার ক্ষেত্রেও সেটাই হলো। ঈদের দিন সকালে ৬টা টার্গেট করেও অবশেষে বেরোতে পারলাম প্রায় ৭টার কাছাকাছি। বাহন আমার টল হ্যান্ডসাম ব্লু আইড বয় ওয়াগন আর এবং সারথি আমি নিজে। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেস ধরে কোলাঘাট পৌঁছে ব্রেকফাস্ট সারলাম। মখমলের মতন NH 116B পেয়ে স্পীডোমিটারের কাঁটা অনেক্ষন ১২০ কিমি/ঘন্টা রাখতে সক্ষম হলাম। নন্দকুমারের পর রাস্তা সরু, পুরো রাস্তাটিতেই PWDর কর্মযজ্ঞ চলছে। চাউলখোলা থেকে বাঁ দিকে যখন মন্দারমনি যাওয়ার রাস্তা ধরলাম, তখন প্রায় সকাল ১১টা। নতুন পিচের রাস্তা গ্রামের ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে একটা সময় ডানদিকে চলে গেছে মন্দারমনি বিচের দিকে। নেভিগেটর এর সাথে চোখাচোখি হওয়াতেই গুগল ম্যাডাম সতর্ক করলেন আমাদের যেতে হবে ওই পয়েন্ট থেকে বাঁদিকে, অর্থাৎ মন্দারমনির শেষভাগের রাস্তাটি ছেড়ে ঠিক উল্টোদিকে। এই রাস্তাটি দেখাচ্ছে প্রায় ৪ কিমি। বাধ্য ছেলের মতন ভাঙাচোরা পিচের রাস্তাটি ধরলাম। ডানপাশে বোঝাই যাচ্ছে চাষের জমিগুলোর ঠিক পরেই আদি অনন্ত বঙ্গোপসাগর। মন্দারমনির আধুনিক চাকচিক্য আর ভিড় না থাকার জন্যই হয়তো এই রাস্তাটি আর আর পাশের গ্রামের মাটির বাড়িগুলো বড় মনোরম লাগছে। ঠিক ১১টায় পৌঁছে গেলাম মিশনের গোলাপী রঙের সুবিশাল খোলা গেটের সামনে, যেন দুহাত দরাজ অকৃপনতায় মেলে ধরে আমাদের অভিবাদন করলো।

Sri Ramkrishna Mandir gate

Sri Ramkrishna Mandir ashram gate

 

৩:

গেট থেকে দুপাশে ঘন বাগানের মধ্যে দিয়ে ইঁটের বাঁধানো রাস্তা গিয়ে শেষ হয়েছে একেবারে অতিথি নিবাসের উঠানে। একতলার ঢালাও বারান্দার একেবারে বাঁ দিকে ভোজন কক্ষ। আর অন্যদিকে একেবারে শেষে মহারাজের ঘর। ঘরের সামনেই বারান্দায় টেবিল চেয়ার পেতে অফিস ঘর। এপাশে বারান্দার পরেই লাগোয়া প্রার্থনা কক্ষ। মহারাজ কে চিনতে বিন্দুমাত্র অসুবিধে হলো না কারণ গেরুয়া বসনে একমাত্র তিনিই দৃশ্যমান। বারান্দার সামনে গাড়িটি পার্ক করতেই ছিপছিপে চেহারার বিধু মহারাজ এগিয়ে এসে স্বাদর অভ্যর্থনায় আমাদের ভেতরে নিয়ে গেলেন।

Sri Ramkrishna Mandir lodge at Lal Kakra beach

Sri Ramkrishna Mandir ashram

একতলার একটি ঘর আমার জন্য বরাদ্দ থাকলেও দোতলার একটি রুম বুকিং কেউ ক্যানসেল করায়, মহারাজ আমাদের চয়েস দিলেন। সমুদ্রের ঝলক পাবার লোভে দোতলার রুমটাই নিলাম। প্রতিটি ঘরই ঝকঝকে তকতকে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। বেশ বড় ঘর, ৪ জন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকও এঁটে যাবে দুটি খাটে। দোতলার বারান্দা থেকে সমুদ্রের প্রথম সাক্ষাৎ পেয়েই মেয়েরা নেচে উঠলো স্নান করবে বলে। মিশনে মধ্যাহ্নভোজের সময় ১২.৩০ থেকে তাই হাতে এখন প্রচুর সময়। ক্যামেরা, গামছা, তোয়ালে নিয়ে মেয়েদের হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে এগোলাম সমুদ্রের দিকে। গেটের ওপারে ১০ পা গিয়েই আলপথ ঢুকে গেছে ডানদিকে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দুপাশে সবজি ক্ষেত। ২ মিনিট হাঁটতেই ফাঁকা জমি অনেকটা।

Way to Lal kakra beach

Way to sea beach from ashram

কানে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে সাগরের গর্জন। খোলা জমিটির গা থেকেই একটু নিচু থেকে শুরু হয়েছে বালিয়াড়ি, সাগর তট। হলদে বালির ঝকঝকে পরিষ্কার দিগন্ত বিস্তৃত এই বালুচর দেখে মনটা পরিপূর্ন হয়ে গেল এক নিমেষে। যাকে বলে লাভ এট ফার্স্ট সাইট! এখন ভাঁটা হলেও সমুদ্র একেবারে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। নিখুঁত নিটোল বালিয়াড়ির ওপর রক্তিম প্রলেপ ছড়িয়ে রেখেছে লাল কাঁকড়ার দল। তাদের নামেই এই সমুদ্র সইকতের নাম – লাল কাঁকড়া বিচ। ১৮০° রও বেশি চওড়া ভিউ পাওয়া যায় এখানকার সমুদ্রের।

Excitement at Lal kakra beach

Excitement at the beach

ডান পাশে দূরে চোখে পড়ছে মন্দারমনি বিচ। সমুদ্র সৈকতে তখন মানুষ বলতে কেবল আমরাই। বড় মেয়ের জম্মদিনে একটি গোটা সমুদ্র একেবারে তার নিজের করে উপহার দিতে পারলাম ভেবে মনটা বেশ পরিতৃপ্ত হলো। পরিতৃপ্তির পুরু প্রলেপ মেয়েদের চোখে মুখেও সুস্পষ্ট। একছুটে তারা তখন চলে গেছে ঢেউয়ের সাথে আলাপচারিতা সারতে। ছবি আঁকতে ব্যাস্ত হয়ে পরলাম আমিও আলোক যন্ত্র হাতে নিয়ে। কিছুক্ষন পর দেখি মেয়েরা আলাপচারিতার গণ্ডি পেরিয়ে তখন সম্পর্কের নতুন উন্মাদনায় মত্ত। শিশু সুলভ সারল্যের উচ্ছলতায় তাদের সাথে হাত মিলিয়েছে সাগর নিজেও ।

Joy at Lal Kakra beach

My elder daughter on the beach

Lal kakra beach

My younger daughter’s excitement at beach

৪ঃ

প্রায় ঘণ্টা খানেক জলে দাপাদাপি করে খিদে টা বেশ চাগাড় দিয়ে এলো। অতিথি নিবাসে ফিরে ফ্রেশ হয়ে সোজা চলে এলাম খাবার ঘরে। অতি যত্ন সহকারে মহারাজ আমাদের খাওয়া দাওয়ার তদারকি করে গেলেন বেশ কয়েকবার। রান্নায় মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারের মা ঠাকুমার হাতের আদর মাখানো স্বাদ। এখানে একটা কথা বলে রাখি, মিশন বলে কিন্তু এটা ভাবার কোন কারণ নেই যে শুধুই নিরামিষ রান্না। আমাদের জন্য দুবেলাই আমিষ বরাদ্দ ছিল – দুপুরে মাছ ভাত এবং রাত্রে ডিম ভাত। ঘণ্টা দুয়েক একটু বিশ্রাম করে ৪.৩০ টা নাগাদ মেয়েদের নিয়ে আবার চলে এলাম নীলাচলের পারে।

Vegetable fields at lal kakra beach

Vegetable fields opposite to ashram

সূর্যের অবস্থান এখন সাগরের বিপরীত দিকে, অর্থাৎ সেই অর্থে সমুদ্রের দিগন্তে সূর্যের বিলীন হয়ে যাওয়া দেখা এখানে দেখা সম্ভব নয়। তবে তাতে কি? আমার তো দরকার ক্যানভাস আর রঙের প্যালেট। শেষ বেলায় জড় হওয়া টুকরো মেঘের দল আশ্বাস দিল আমাকে নিরাশ করবে না। এই প্রথমবারের জন্য নিজেদের ছাড়াও গুটি কয়েক অন্য মানুষ চোখে পড়লো সমুদ্র সৈকতে।

Boatmen at Lal kakra beach

Boatmen at Lal kakra beach

Stranded boat at Lal Kakra beach

Stranded boat at beach

Lal kakra beach men at work

Boatmen at work of day end

দূরে দেখা যাচ্ছে একটি নৌকো উলটো করে রাখা পারে। এক দল লোক মনে হল সেই নৌকো মেরামতের কাজে ব্যাস্ত। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম সেদিকে। পড়ন্ত বেলার মায়াময় আলোক ধারায় এক মিষ্টি মধুর আবেশে গ্রাস হয়ে আছে আমার সামনের এই পৃথিবী। দূরে দেখা যায় এক দল শিশু মেতে উঠেছে ঝিনুক কুড়ানোতে। পেছন দিকে গ্রামের প্রান্তর যেখানে শেষ, সেই দিগন্তে স্থানীয় একদল কিশোর দিনের শেষ আড্ডায় বুঁদ হয়ে আছে গোধূলির রং মেখে।

­

Featured image of Lal kakra beach

Beautiful sunset at Lal Kakra beach

Local boys at Lal Kakra beach

Local boys in their leisure during sunset

Sunset at Lal kakra beach

Sunset at Lal Kakra beach

পশ্চিমের আকাশে তখন একের পর এক রঙিন ছবির মালা গেঁথে চলেছে বিদায়ী সূর্য। নীলাচলের নীল তখন আরও গাঢ় নীল। সেই নীলের শেষ বিন্দু অবধি উপভোগ করে ফিরে এলাম অতিথি নিবাসে ঠিক সন্ধ্যে ৬ টায়।

৫ঃ

মঠের লাগোয়া অবস্থিত একটি বালক আবাসিক এবং অনতি দুরেই তাদের বিদ্যালয়। আবাসিকে ৪০ জন বালক অধিবাসী বর্তমানে থেকে পরাশুনা করে। ঠিক সন্ধ্যে ৬ টায় মহারাজ এই ৪০ জন বালক কে নিয়ে প্রার্থনা কক্ষে সান্ধ্য আরতি ও প্রার্থনা করেন। সমবেত কণ্ঠে তাদের প্রার্থনার সুর আপনাকে অতি অনায়সে নিয়ে চলে যাবে এক মহা জাগরনের দেশে, যেখানে নিজের আমিত্ব বিসর্জিত হয়ে ওই মুহূর্তে জন্ম নেয় এক নতুন আমির। সেই সুরে স্তব্ধ হয় মন, শান্ত হয় সমস্ত বাহ্যিক টানাপড়েনের অশান্ত হাতছানি। জীবন এখানে তরঙ্গময়, অথচ তবু তারা নিয়মে বাঁধা। নিয়মানুবর্তিতার গণ্ডিতে থেকেও যে জীবনকে তরঙ্গময় সুরময় করে তোলা সম্ভব তারই শিক্ষায় দিক্ষিত এই বালকের দল।

Prayer hall at Sri Ramkrishna Mandir

Evening prayers by ashram children

প্রার্থনা শেষে পরিবেষ্টিত হয় মুড়ি, চপ এবং চা। চা খেয়ে দোতলার বারান্দায় বসতেই দেখি একমুখ হাসি নিয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে অর্ধ পূর্ণিমার চাঁদ। নিকশ কালো আকাশে রত্ন খচিত তারকা মণ্ডল। আর তার সাথে এক মিঠে ঠাণ্ডা হাওয়া। এত কিছুর মাঝে নিজেকে ধরে রাখা অসম্ভব। ক্যামেরা আর ট্রাইপড টা হাতে নিয়ে মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম তারাও আমার সাথে নৈশ অভিযানে যেতে প্রস্তুত। মহারাজের সাথে আগে কথা বলে অবশ্যই জেনে নিয়েছিলাম যে রাত্রে সমুদ্র পারে যাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এখানে। মঠের গেট ছাড়িয়ে রাস্তা ধরে কিছুটা এগতেই আপ্লূত হলাম মনরম জ্যোৎস্নার আলোর প্লাবনে। আলপথ এবং তার চারিপাশ যেন এক রুপালী আলোর বন্যায় ভেসে গেছে। বৈদ্যুতিক আলোর রেশের বাইরে এসেও বিন্দুমাত্র অসুবিধে হল না পথ চলতে। বালিয়াড়ি যেখান থেকে শুরু হচ্ছে একেবারে সেই প্রান্তে গিয়ে ট্রাইপড নিয়ে ঘাঁটি গাড়লাম। সমুদ্র এখন অনেকটাই এগিয়ে এসেছে সামনে জোয়ারের টানে। পারে আছড়ে পড়া ঢেউ গুলোকে দেখে মনে হল তারা যেন কোন এক দৈবলোকের বার্তা বহন করে আনছে রুপালী মোড়কে মুড়ে। তার সাথে তাল মিলিয়ে বিপুল জলরাশির কলতান এবং স্নিগ্ধ শীতল হাওয়া। এহেন পরিবেশ শুধুই উপলব্ধি করা যায়, ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

Lal kakra beach evening

Night expedition to the beach

নিজের উপস্থিতি সেখানে বিলীন হয়ে যায় বিশ্ব চরাচরের সুদূর গভীরে। ওই যে সামনের ওই মহা সমুদ্র, ওই যে দিগন্ত ব্যাপী মহাকাশে রত্ন খচিত তারকা বলয়…তার মাঝে অতি সামান্য, অতি খুদ্র কণা এই মনুষ্য জীবন। ” অন্ধকারেও কি এইটা দিয়ে ফটক তোলা যায়, বাবু? ” – প্রশ্নটা শুনে একটু চমকেই উঠি। কখন যে মানুষটি পাশে এসে দাঁড়িয়ে আমার কীর্তিকলাপ দেখছিলেন আমার অজান্তে , তা টেরই পাইনি। স্থানীয় বাসিন্দা তিনি। ট্রাইপড জিনিসটার সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নন তিনি, তাই কৌতূহল বসত এগিয়ে এসেছেন। মঠের অতিথি নিবাসে উঠেছি শুনেই আলাপ জমিয়ে দিলেন ভদ্রলোক। নানান গল্পে বেশ কিছুক্ষণ আরও কাটিয়ে রাত ৯.৩০ টার খানিক আগে ফিরে এলাম নিবাসে।

৬ঃ

রাতের খাওয়া পরিবেশন শুরু হয় ৯.৩০ থেকে। যথা সময় খাওয়া দাওয়া সেরে ফিরে এলাম ঘরে। সকালে সূর্যোদয় দেখতে হবে বলে দুটি মোবাইলে ৪.৩০ য় অ্যালার্ম দিয়ে রাখলাম। পরদিন অবশ্য অ্যালার্ম বাজার অনেক আগেই ঘুম গেল ভেঙ্গে। ঘড়িতে তখন সবে ৩.৩০। বিদ্যুৎ বিভ্রাট। পাখা লাইট সব বন্ধ। দোতলার ঘর হওয়াতে ছাদের গরম তখনও চুয়ে চুয়ে নামছে। মেয়েদের ডাকতে গিয়ে বুঝলাম তারা তখনও গভীর ঘুমে। অনেক কষ্টে তাদের ক্ষীণ সারা থেকে যা বুঝলাম কে তারা একেবারে সমুদ্র স্নানে যাবে পরে, এই মুহূর্তে তারা বিছানা ছাড়তে রাজি নয়। অগত্যা একাই বেরিয়ে পরলাম ছবির সন্ধানে।

Sunrise at Lal Kakra beach

Sunrise at Lal Kakra beach

এইবার কিন্তু ভাগ্য আমার অতটা সাথ দিলো না। পুরু মেঘের আস্তরণে ঢেকে রইলো সূর্যোদয়ের প্রথম মুহূর্ত গুলো। নতুন রবির দেখা পেলাম অনেক পরে, সে ততক্ষনে ঊর্ধ্বগগনে বিরাজমান। নিবাসে গিয়ে দেখি সকালের প্রার্থনা শুরু হয়েছে। প্রার্থনা শেষ না হওয়া অবধি চা পরিবেশন করা হয় না। তাই কিঞ্ছিত অপেক্ষা করে একেবারে চা খেয়ে মেয়েদের নিয়ে ফিরে এলাম সমুদ্র সৈকতে। ঠাণ্ডা জলে জলকেলি করে উঠতে উঠতে হয়ে গেল  সকাল গড়িয়ে প্রায় ৮ টা। মহারাজের সাথে কথা বলে জানলাম আশেপাশের কোন গ্রামে ট্র্যান্সফরমার বিকল হয়ে পরায় এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট, যা ঠিক হতে সময় লাগবে।  ঘরে ফিরে একেবারে তৈরি হয়ে নিচে চলে এলাম আমরা। ৮.৩০  টা নাগাদ লুচি তরকারি দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে মহারাজের থেকে বিদায় নিয়ে কোলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। মনে মনে কামনা করলাম এই সমুদ্র সৈকত ঘিরে যেন আর কোনো হোটেল না গড়ে ওঠে। দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরের এই আদি অকৃত্রিম শান্ত স্নিগ্ধ মনোরম পরিবেশ যেন চিরকাল এভাবেই উপভোগ করতে পারি আমরা। আধুনিকতার দংশন থেকে না হয় আলাদাই পরে থাকলো এই লাল কাঁকড়া বিচ। ক্ষতি কি তাতে?

© Arijit Kar

5 1 vote
Article Rating

I am eager to know your views on this post. Please leave a reply

5 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Anonymous
Anonymous
3 years ago

ভালো লাগল । বিধু মহারাজের ফোন নং ?

Anonymous
Anonymous
3 years ago

খুবই ভাল লেখা, পড়ে অনেককিছু জানতে পারলাম, ধন্যবাদ।

error: Content is protected !!
%d bloggers like this: