১:
সেই কোন ছোটবেলায় সত্যজিৎ রায়ের আগন্তুক দেখার পর থেকেই আদিবাসী জীবন যাত্রার ওপর একটা মোহ জন্মেছিলো। আর তার সাথে সাথেই চলে এসেছিলো শান্তিনিকেতনের আদিবাসী গ্রাম গুলো চাক্ষুস দেখার একটা অদম্য ইচ্ছে। হ্যাঁ। কবিগুরুর বিশ্বভারতীর থেকেও যেন…..লাল মাটি, আদিবাসী গ্রাম, বাউল আর শান্তির নিকেতন আমায় অনেক বেশি টানতো। প্রান্তিক থেকে কিছুটা দূরেই এমনি এক লাল মাটি আর সবুজে ভরা গ্রাম হলো শ্যামবাটি। ২০১৫ র মার্চ মাসের এক শনিবার উঠে বসলাম শিয়ালদা থেকে সকাল ৭.২০ র মা তারা এক্সপ্রেসে।
২:
১১ টার কাছাকাছি প্রান্তিক স্টেশনে নেমে যখন একটা টোটো নিলাম, তখন কাঠফাটা রোদ। আমার গন্তব্য, Shyambati Nature Interpretation Center এ মিনিট পনেরোর মধ্যেই পৌঁছে গেলাম। অনেকটা জায়গা জুড়ে এই প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। থাকার জন্য আগে থেকে অনলাইন বুকিং করে রেখেছিলাম WBSFDA এ ওয়েব সাইট থেকে। ৩-৪ টি কটেজ এর মধ্যে একটিতে আমার থাকার ব্যবস্থা ঠিক করে দিলেন কেয়ারটেকার। বেশ সুন্দর কটেজ গুলো। চওড়া বারান্দা এবং ঘর গুলোও মোটামোটি বড়সর। শনিবার তাই শনিবারের সোনাঝুড়ির হাট টা আমার মুখ্য পরিকল্পনা ছিলো সেদিনের জন্য। স্নান সেরে ওনাদের ক্যান্টিনে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ করলাম। তখনও জানতাম না যে সেই শনিবারের বারবেলাতে পূর্ব পরিকল্পিত সোনাঝুড়ির হাট ছাড়াও আরও এক চমক অপেক্ষা করে আছে আমার জন্য।
৩:
ঘড়িতে তখন প্রায় ১টা। কেয়ারটেকার বাবুর থেকে ইতিমধ্যেই খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম টোটো নিয়ে খোয়াই পৌঁছতে ১৫ মিনিটের বেশি লাগবে না। সোনাঝুড়ির হাট বসে বিকেলে। কাজেই হাতে এখন অঢেল সময়। কম্পউন্ডেই অবস্থিত প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র টা ঘুরে নিলাম খাওয়াদাওয়ার পর। দ্বিপ্রাহরিক নিদ্রার একটি বদভ্যাস আমার আছে। অতএব ঘড়িতে তিনটের এলার্ম দিয়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন হলাম। কিছুক্ষণ পরই হঠাৎ কেন জানিনা তন্দ্রা কেটে গেল। উঠে ঠিক ঠাওর করতে পারলাম না কিন্তু জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি কোথায় সেই রোদ্দুর, বেশ যেন অন্ধকারাচ্ছন্ন বাইরেটা। বিদ্যুৎ ঝলকের মতো মাথায় একটাই ভয় এলো। নির্ঘাত এলার্মে আমার ঘুম ভাঙেনি। সন্ধ্যে হয়ে গেছে এবং আমি সোনাঝুড়ির হাট মিস করলাম। প্রচন্ড গ্লানি নিয়ে চিন্তার সাথে ঘড়ি টা মেলাতে গিয়ে দেখি সবে তো ২টো বাজে! মনে যেন বল ফিরে পেলাম। লাফ মেরে উঠে সোজা বারান্দায় এসে দেখি আকাশ নিকশ কালো মেঘে ঢাকা। সামনে দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ আর সবুজ। দূরে ঘন জঙ্গলের পর্দা টাঙানো। মিঠে হালকা ঠান্ডা বাতাস আমার চোখে মুখে এসে ধাক্কা খাচ্ছে। ক্যামেরা টা গলায় ঝুলিয়ে নেমে পড়লাম সবুজ প্রান্তরে। চোখ বুজে প্রাণ ভরে আলিঙ্গন করলাম কাল বৈশাখীর আগের মুহূর্তটিকে। সে অদ্ভুত ভালো লাগা। ঝোড়ো ঠান্ডা হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। নিকশ কালো আকাশ। সমান্তরালে বড় বড় গাছ। সামনের সবুজ প্রান্তর টা যেন আরো সবুজ লাগছে।
হাওয়ার দাপটে আকাশে এলোমেলো পথ হারানো একঝাঁক পাখির উড়ে বেড়ানো দেখতে দেখতে মিশে গেলাম সবুজের সাথে। লেন্সে ধরে রাখলাম বেশ কিছু মুহূর্ত। এরই ফাঁকে দেখি কোনো এক বিদেশী সামনে সমান্তরালে পাখির খোঁজে দূরবীন এ চোখ লাগিয়ে হেঁটে চলেছে। তার গায়ের রং ও পরিবেশ যেন এক মায়াজালে বিস্তৃত। কিছুক্ষনের মধ্যেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলো। ফিরে এলাম কটেজ এ। টানা দুঘন্টা ঝড় ও বৃষ্টির পর বেরিয়ে পড়লাম খোয়াইয়ের উদ্দেশ্যে।
৪:
আজ সোনাঝুড়ির হাটে অনেক বিক্রেতা আসতে পারেন নি বৃষ্টির জন্য। তাতে অবশ্য ক্রেতাদের কোনো ভাটা পড়েনি। কোথাও বা মহিলাদের কানের দুলের সম্ভার। ধানের শীষের গয়না, ছোট ছোট শুকিয়ে যাওয়া ফল এবং ফলের বীজ দিয়ে কানের দুল বানিয়ে সুন্দর করে একটি বোর্ডে সাজানো।
কোথাও শান্তিনিকেতনের পাঞ্জাবি। কোথাও বা ঘর সাজানোর জিনিস, কোথাও বা একতারা দোতারা। এরই মাঝে খোয়াইয়ের একটু গভীরে দেখি ভুতের রাজা। পড়ন্ত আলোয় হঠাৎ চোখ পড়লে একটু চমকাতে হয় এই বহুরূপী কে দেখে।
সব মিলিয়ে বেশ রঙীন এই হাট। বিক্রেতাদের মাঝে কোথাও ছড়ানো ছেটানো বাউল আপনমনে তার একতারা বাজিয়ে গান ধরেছে। কিছু পর্যটক তাঁদের সঙ্গে তাল ও মেলাচ্ছেন। ছোট্ট একটি মেয়ে সদ্য তুলে আনা পদ্ম সাজিয়ে বসে বিক্রি করছে।
এই হাটের বৈশিষ্ঠ দেখলাম প্রত্যেকটি জিনিস যেগুলো বিক্রি হচ্ছে, তার মধ্যে কোনো এক শিল্পীর নিপুন হাতের স্পর্শ বর্তমান। আমরা কোলকাতার লোক হাট বলতে যা বুঝি, তার থেকে অনেকটাই আলাদা এই সোনাঝুরি। বিকেলের আলো ফিকে হয়ে এসেছে। টোটো ওয়ালার কথায় এগিয়ে চললাম বিশ্বভারতীর উপাসোনাগার কে রাতের রূপে দেখতে একবার। গরম তখন অনেকটাই কম। ফাঁকা রাস্তা। পথের বাঁ ধারে ধূধূ প্রান্তর, তারই সমান্তরালে মেঘের আচ্ছাদন থেকে সূর্যটা বেরিয়ে এসে জানান দিল তার উপস্থিতি, সঙ্গে সূর্যাস্তের প্রস্তুতি।
আধ ঘন্টায় পৌঁছে গেলাম বিশ্বভারতীর চত্বরে। আলোকিত বট বৃক্ষের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে চোখ আটকে গেলো আমার।
সব যেন এক স্বপ্নের জগৎ। একটু এগিয়েই বাঁ হাতে পেয়ে গেলাম উপাসনাগার। প্রাঙ্গনের প্রধান ফটক খোলাই ছিল। উপাসনাগার বন্ধ থাকলেও চোখ ভরে গেল তার নৈশ রূপ দেখে। হালকা আলো যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে বেলজিয়াম গ্লাস গুলো থেকে। পা আটকে গেল । এক মায়াবী পরিবেশ চারিদিকে। নিস্তব্ধ। উপাসনাগারের প্রতিটি ইটে যেন শান্তি বিরাজমান। স্বার্থক নাম করন। সত্যি শান্তির নিকেতন এই সন্ধ্যার শান্তিনিকেতন!!
৫:
আজ অনেকটা সময় আদিবাসী গ্রাম গুলোতে কাটাবো ঠিক করে সকাল সকাল একটা টোটো ঠিক করে বেরিয়ে পড়লাম। আগের দিনের বৃষ্টি তে ভিজে, আজ যেন খোয়াই কে আরো সবুজ লাগছে। গতকাল যে জায়গায় সোনাঝুড়ির হাট ছিলো, আজ তা শুনশান। দেখে বোঝার উপায় নেই এখানেই কাল রঙীন মেলা বসে গেছিল বিকেলে। আজ শুধু একটাই রং চোখ জুড়িয়ে দিচ্ছে, সবুজ।
সোনাঝুড়ির বনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলাম। আদিবাসী ছোঁয়া অনুভব করলাম। কোথাও বা বিশ্বভারতীর শিক্ষার্থীরা বসে খোয়াইয়ের landscape তাঁদের ক্যানভাস এ তুলে ধরছে।
কোথাও বা পাশের গ্রাম থেকে আসা এক আদিবাসী মহিলা ভাঙা ডাল কুড়াচ্ছে রান্নার জ্বালানির জন্য। কোথাও বা শৈশব ছুটির আনন্দে, খেলে বেড়াচ্ছে খোয়াইয়ের আনাচে কানাচে।
কিছুদূর এগিয়ে পেলাম প্রকান্ড এক বুদ্ধ মূর্তি। খোয়াইয়ের এদিকটায় গাছের সংখ্যা কোন। বুদ্ধ এখানে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বিরাজমান। ধবধবে সাদা এই মূর্তি যেন শান্তিনিকেতনের শান্তির বার্তাই সকল কে দিচ্ছে। ১৯৯৩ সালে বৌদ্ধ সন্যাসী Ven. Bhikkhu Binayshree Mahathero এবং Manik Baran Barua এখানে Santiniketan Ambedkar Buddhist Welfare Mission প্রতিষ্টা করেন বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের জন্য। এই মিশন থেকেই এই বৌদ্ধ মূর্তির প্রতিষ্ঠা। পাশেই দেখলাম monastery। ওখান থেকে কিছুটা হেঁটে চলে এলাম প্রকৃতি ভবন নেচার আর্ট মিউসিয়াম। প্রাকৃতিক পরিবেশে ওখানকার ই কোনো গাছ বা গাছের গুড়ি থেকে নানান ভাস্কর্য ফুটে উঠেছে।
৬:
রাঙা মাটির পথ ধরে এগোতে এগোতে এইবার ঢুকে পড়লাম এক আদিবাসী গ্রামে।
সাঁওতাল গ্রাম। সত্যজিৎ বাবুর আগন্তুক এর আদিবাসী গ্রামের থেকে অনেক তফাৎ আজকের দিনের এই গ্রামগুলোর। উন্নত পশ্চিমবঙ্গের ছিটেফোঁটা এই গ্রাম গুলোতেও দৃশ্যমান। গ্রামের ভেতরের রাস্তা কয়েক জায়গায় কংক্রিটের। গ্রামে বিদ্যুতের প্রবেশ ও ঘটেছে। স্ট্রিট ল্যাম্প গুলো সোলার এ চলে।
তবে উন্নতির এই হাওয়াতে কিছুটা তাল মেলালেও সাঁওতাল গ্রামের আদি সত্তা আজও পুরো মাত্রায় বর্তমান। প্রায় প্রতিটি বাড়িই মাটির। বাড়ির চাল কোথাও বা খড়ের, কোথাও বা এসবেস্টর্সের। প্রত্যেকটি বাড়ির মাটির দেওয়াল যেন একেকটি ক্যানভাস। কোথাও বা শুধুই হাতে আঁকা গ্রাম বাংলার চলচিত্র। কোথাও বা মাটির প্রলেপেই ফুটে উঠেছে দেয়ালের গায়ে অসাধারণ সব ভাস্কর্য। তার ডিটেলিং দেখে মুগ্ধ হয়ে যেতে হয়। একটু হয়তো অবস্থাসম্পন্ন যে সংসার গুলো, তাদের আবার মূল বাড়িটির সামনে মাটির পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। সেই পাঁচিলে খুব সযত্নে গড়া এক সিংহদুয়ার যেন। আমার টোটো ওয়ালা সাঁওতাল ভাষা জানেন। তাঁর সাহায্য নিয়ে কিছু কিছু বাড়ির ভেতরে ঢুকলাম। এরকমই একটি বাড়ির হেসেলঘর বেশ দৃষ্টি আকর্ষণ করলো আমার। এক বয়স্কা মহিলা দেখলাম রান্নায় ব্যস্ত। প্রকান্ড সব মাটির তৈরী রান্নার সাজ সরঞ্জাম তাঁর সামনে। সুন্দর করে নিকোনো উঠোন সব বাড়িতেই। উঠোনের এক কোনায় রান্নার উনুন। উনুন গুলো যেন মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে, আলাদা করে বসানো নয়। সবকিছুই যেন বেশ পরিপাটি। রাস্তাঘাট, বাড়ির দেওয়াল, উঠোন…দেখে মনে হয় যেন কেউ ঝুলন সাজিয়েছে পরিপাটি করে।
৭:
সাঁওতালদের জীবনযাত্রার ছোট্ট একটা চলচিত্র মনে এঁকে, এবার পা বাড়ালাম কোপাই নদীর দিকে। কোপাই নদীর এপারে দেখলাম একটি চায়ের দোকান। গাছের ছায়ায় দোকানটি। সামনে দুটি বেঞ্চ পাতা। চা ছাড়া দেখলাম চপ মুড়িও আছে। অল্প একটু জিরোনোর জন্য এক কাঁসা মুড়ি, চপ আর চা নিয়ে বসে গেলাম আমি আর টোটো ওয়ালা। গাছের ছায়ায় আর কোপাইয়ের হালকা মিঠে হাওয়ায় ঘুম চলে আসার জোগাড় ! এরই মধ্যে এক বাউল সেখানে উপস্থিত। নাম ওনার পানু দাস বাউল। অনেকটা পথ হেটে এসে একটু জিরোচ্ছেন। পানু দাস বাউল মনে হয় আমার মনের ইচ্ছে টা পড়ে ফেললেন। নিজেই জিজ্ঞেস করলেন আমি গান শুনবো কি না। আর পায় কে আমায়। দোতারার সুরে তিন তিনটি বাউল গান উনি আমায় শোনালেন। মন প্রাণ জুড়িয়ে গেল ওই পরিবেশে।
পানু দাসকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলাম। সামনেই ছোট্ট একটি কংক্রিটের ব্রিজ কোপাইয়ের ওপর দিয়ে। ব্রিজ থেকে নদীর অনেকটাই দেখা যায়। বর্ষায় কি হয় জানিনা, তবে এখন জল অনেকটাই কম। এঁকেবেঁকে চলেছে কোপাই। তার দুপারে নিত্য জীবনযাত্রায় ব্যস্ত কিছু গ্রামের মানুষ।
৮:
বেলা গড়িয়ে এখন প্রায় ১২টা। আমার আজকের থাকার বুকিং আছে WBTDCL এর শান্তিনিকেতন টুরিস্ট লজে। কোপাইয়ের কিছু ছবি নিয়ে, চলে এলাম সোজা লজে। ওই বেলার জন্য তুলে রাখলাম বিশ্বভারতী আর কঙ্কালিতলা। স্নান ও মধ্যাহ্নভোজ সেরে প্রথমেই গেলাম বিশ্বভারতী। সুবিশাল ক্যাম্পাস। সমস্ত ক্যাম্পাস টা সবুজে মোড়া। খোলা আকাশের নীচে সবুজের মাঝে এই শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ পুরুষ স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি নিজে কোনোদিন স্কুলে না গিয়েও, শিক্ষা ব্যবস্থার এক নতুন দিক…এক নতুন অধ্যায় তিনি খুলে দিয়েছিয়েন পৃথিবীর সামনে। বিশ্বভারতী যেন তাঁর সেই চিন্তাভাবনার ধারক ও বাহক। সবুজ সেই প্রাঙ্গনে বসে সামনের অশ্বথ গাছটার তলায় ছাত্রগনদের বসার জায়গা গুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বেশ কিছুটা সময় যেন হারিয়ে গেলাম শৈশবের সহজপাঠের পাতায় পাতায়। এরপর উত্তরণ করলাম উত্তরায়নে। উত্তরায়ণ কবিগুরুর জীবনের পাঁচটি স্তরের পাঁচটি বাড়ির সাক্ষ্য নিয়ে আজও বর্তমান। তাঁর রোজকার জীবনের ব্যবহৃত অনেক জিনিসই এখানে দেখতে পাওয়া যায়।
বিশ্বভারতী কে বিদায় জানিয়ে এবার চললাম কঙ্কালিতলা। কঙ্কালিতলা ৫১ পিঠের এক পিঠ। সতীর কাঁখ কথিত আছে এখানেই পড়েছিলো। সেই জায়গায় আজ ছোট্ট একটি জলাশয়। সেই পবিত্র জলাশয়ের পাশেই কঙ্কালিতলার মন্দির। খুব জাগ্রত তাই বারো মাসই এখানে ভিড়। মন্দিরে ঢোকার আগে সারী দিয়ে দোকান সাজানো পুজোর ডালি তে। মন্দির দর্শন করে বেরিয়ে দেখলাম সামনেই এক বিশাল মাঠ। গাছতলায় বসে এক বৃদ্ধ কোন এক হারানো সুরের খোঁজে বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন আপনমনে। পরে জেনেছিলাম, শুধু আমি নই। অনেকেই যাঁরা কঙ্কালিতলা গেছেন, তাঁরা এই বৃদ্ধ কে দেখেছেন। জানিনা উনি কত বছর ধরে এই গাছতলায় বসে সুরের আরাধনা করেন…কখনো বাঁশি নিয়ে কখনো বা দোতারায় ঝড় তুলে। তবে এইটা উপলব্ধি করেছি, ওনার চোখে চোখ পড়লে চোখ ফেরানো দায়। কি অসম্ভব দৃঢ়তা সেই চোখে। তাঁর সুরের নিবিড় অধ্যবসায় তাঁর চোখ থেকে আজও যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে।
এবার লজে ফেরার পালা। মন টা বেশ ভালো লাগছে। অন্যভাবে শান্তিনিকেতন কে পেতে চেয়েছিলাম। সেইভাবেই পেলাম শ্যামবাটি থেকে শান্তিনিকেতন।
Hi! I am from Kolkata, India. Travelling and photography is my passion. As I love landscape photography most, travelling goes hand in hand with it. Since my matriculation days I started travelling. I have also penned down a book on my travelling which is available in Amazon in the name of Ghuranchandi – Part 1. Whatever travel experiences I have, I have shared those in my blog in the form of travel stories.